উনিশ শতকে লোকসাহিত্যের প্রতি শহুরে সুধীজনের আগ্রহ ও কৌতূহলের নেপথ্যে ইউরোপীয় প্রবণতা- বিশেষেরও ভূমিকা ছিল। তখন গ্রিম ভাইদের সংগৃহীত জার্মান অঞ্চলের রূপকথা ছাড়াও নরওয়ে, আইসল্যান্ড, স্কটল্যান্ড প্রকৃতি অঞ্চলের নানা জাতির পুরাণ কিংবদন্তি, গল্পকথা সঙ্কলনের প্রতি মহাউৎসাহ জেগেছিল পণ্ডিত-গবেষকদের মধ্যে। এতে সমর্থন ও সহযোগিতা ছিল শাসক মহলেরও। কারণ শাসিতদের সম্পর্কে জানা না থাকলে শাসন যে কঠিন হয়ে পড়ে তা ইউরোপের ঔপনিবেশিক শক্তিগুলো বুঝেছিল দেশে-দেশে বিদ্রোহ-অভ্যুত্থান মোকাবেলা করে। এ দেশেও ১৮৫৭ সালের রক্তরঞ্জিত লড়াইয়ের পর ইংল্যান্ডের রাজশক্তি শোষণের প্রক্রিয়া বদলাতে নতুন কৌশল আনতে চেয়েছিল শাসন-ব্যবস্থায়। ওই লক্ষ্যে তারা অন্য এক প্রক্রিয়ায় খোঁজ নিতে শুরু করেছিল বৃহৎ জনজীবনের ধর্মকর্ম, ভাষা, সাহিত্য, সংস্কৃতি সম্পর্কে। তাদের এসব উদযোগ সচেতন করেছিল। সেকালের বিশিষ্ট লেখকদের। সেই সচেতনতার ফসল বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের 'বাঙ্গালার কৃষক', দীনবন্ধু মিত্রের 'নীল দর্পণ', মীর মশাররফ হোসেনের 'জমীদার দর্পণ', রেভারেন্ড লালবিহারী দে'র 'প্রেজ্যান্ট লাইফ ইন বেঙ্গল' ও অন্যান্য গ্রন্থ। শেষোক্ত বইটি পড়ে ইংরেজ কর্মকর্তা ক্যাপটেন আর. সি. টেম্পল চিঠি লিখে লেখককে উদ্বুদ্ধ করেছিলেন বাংলার ঘরে-ঘরে দাদি-নানিদের মুখে-মুখে চলে আসা গল্পগুলো সংগ্রহ করতে, গ্রন্থাকারে সঙ্কলিত করতে। সেই উদ্বুদ্ধকরণের ফল 'ফোক-টেলস্ অভ বেঙ্গল' (১৮৮৩) নামের ঐতিহাসিক সঙ্কলন গ্রন্থ, এ দেশের প্রথম সরাসরি সংগৃহীত রূপকথা, উপকথা, লোককাহিনী, কিংবদন্তি-যার অনুসূতি এই 'বাংলার লোকরচনা'।
Specification
Titel: | ফোক টেলস অব বেঙ্গল |
---|---|
Author | লাল বিহারি দে |
Translator: | সাযযাদ কাদির |
Publication: | দিব্যপ্রকাশ |
ISBN: | 9789849054566 |
Edition: | 2017 |
Number of Pages: | 192 |
Country: | Bangladesh |
Language: | Bangla - বাংলা |