শ্রী আলামোহন দাশ

সালটা ১৮৯৫, পশ্চিমবঙ্গের হাওড়া জেলায় খিলা- বারুইপুর গ্রামে, এক নিম্নবিত্ত কৃষক গোপীমোহন দাশেরর ঘরে জন্মগ্রহন করেন সুরেন্দ্র মোহন দাশ। নাহ্ এই নামে তাঁকে আমরা কেও চিনি না, আমরা চিনি তাঁকে আলামোহন দাশ নামে। শৈশবে কঠিন রোগে আক্রান্ত হন, হয়তো মরেই যেতেন, কবিরাজ মৃত বলায় তাকে শ্মশানে নিয়েও যাওয়া হয়েছিলো দাহ করার জন্য, কিন্তু বিধাতার অশেষ কৃপায় দাহ করার সময় দেখা যায় তিনি জীবিত! মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে আসার কারনে তাঁকে " এলা ছেলে" ডাকা হতো আর তা থেকেই তাঁর নাম আলামোহন হয়েছিলো। এভাবেই মৃত্যুর মুখ থেকে তিনি ফিরে এসেছিলেন, হয়তো বিধাতা চেয়েছিলেন "ব্যবসায় বিমুখতা" নামক অপবাদ থেকে বাঙ্গালী জাতি বের হয়ে যেন তাঁর মাধ্যামেই সাবলম্বী হয়ে উঠুক। চরম পারিবারিক আর্থিক অভাব অনটনের কারনে প্রাতিষ্ঠানিক পড়াশোনা খুব একটা এগোই নি আলামোহনের, স্ব শিক্ষিত আলামোহন কি করেন নি তার প্রথম জীবনে? মুড়ি বিক্রি, কোলকাতা শহরে মজুর, সেলসম্যান! পরবর্তী কালে নিজে খাদ্য শস্যের দোকান দেন, এভাবে পরিশ্রম, একাগ্রতা, কর্মনিষ্ঠায় তিনি ধাপে ধাপে তিনি উন্নতির চরম শিখরে পৌঁছে যান, কিছু একটা করবেন এই চিন্তা তে ভারতবর্ষের বিভিন্ন শহর এমনকি ঢাকাতেও এসেছিলেন আলামোহন গিয়েছিলেন বার্মা তেও, আর জীবনের প্রতিটি ধাপে বঙ্কিম, রবীন্দ্র সাহিত্য, আর আচার্য প্রফুল্লচন্দ্রের কর্মময় জীবন অনুপ্রেরণা হিসাবে কাজ করতো। জীবনে ব্যর্থতাও আছে আলামোহনের কিন্তু সেখানে তিনি হতোদ্যম হন নি বরং ব্যর্থতা থেকে শিক্ষা নিয়ে আরো এগিয়ে গেছেন , কেমিক্যাল ফ্যাক্টরি, বিভিন্ন ধরনের মেশিন তৈরীর কারখানা, ইন্সুইরেন্স কোম্পানি, সুগার মিল, ড্রাগ কোম্পানি এমনকি ব্যাংক ব্যাবসাও করেছেন তিনি। এছাড়াও স্কুল, মন্দির নির্মান, পুকুর খননের মতো জনহিতকর কাজও করে গেছেন। প্রতিষ্ঠা করেছেন নিজ নামে শিল্প নগরী দাশ নগর। আর তাঁর এই জীবন পরিক্রমা শূন্য থেকে সিন্ধু হবার বৃত্তান্ত তিনি নিজে লিখে গেছেন তার আত্মজীবনী " আমার জীবন" নামক গ্রন্থ তে। কর্মবীর আলামোহন ১৯৬৯ সালে কোলকাতায় মারা যান।

Author's Books

We found 1 items for you!

Image-Description
Image-Description
Image-Description
Image-Description