আবুল হাসনাত মনেপ্রাণে বাঙালি ছিলেন। বাঙালির ইতিহাস, ঐতিহ্য ও মনীষা নিয়ে সর্বদাই ভাবতেন। কিন্তু সে ভাবনা তাঁকে মোটেই সীমাবদ্ধ করেনি। কারণ একই সঙ্গে তাঁর দৃষ্টিভঙ্গিতে কার্যকর ছিল আন্তর্জাতিকতা। এই আন্তর্জাতিকতা অন্যত্রও রয়েছে, বিশেষভাবে আছে এই বইয়ের দু'টি প্রবন্ধেঃ একটি তিনি লিখেছেন পাবলো নেরুদা'কে নিয়ে, অপরটির বিষয়বস্তু ফয়েজ আহমদ ফয়েজ। পাবলো নেরুদা'কে লেখাটি দীর্ঘ সংকলনের দীর্ঘতম রচনা ওইটিছ। নেরুদা'কে কেবল কবি হিসেবে নয়, হাসনাত দেখেছেন তাঁকে গত শতাব্দীর বিবেকী কণ্ঠস্বর হিসেবেও। নেরুদা আজীবন যুদ্ধক্ষেত্রে ছিলেন: তিনি লড়ছিলেন ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে; তাঁর নিজের দেশে এবং স্পেনে। কবির এই রাজনৈতিক লড়াইটা এবং সে লড়াইয়ের আন্তর্জাতিকতা হাসনাতকে আকৃষ্ট করেছে, নাড়া দিয়েছে। উর্দু ভাষার কবি ফয়েজ আহমদ ফয়েজকে নিয়ে লেখাটাও দীর্ঘ এবং গুরুত্বপূর্ণ। ফয়েজকেও তিনি চিনেছেন সমাজ পরিবর্তনে অঙ্গীকারবদ্ধ কবি হিসেবেই। এই কবির জীবনধারা ও কর্মপ্রবাহ তিনি অনুসরণ করেছেন। ফয়েজ আহমদ ফয়েজের জন্ম পাঞ্জাবে; এবং অন্য অনেক পাঞ্জাবির মতোই তিনিও প্রথম জীবনে সেনাবাহিনীতে যোগ দিয়েছিলেন। কিন্তু সেখানে থাকতে পারেননি, ১৯৪৭ সালেই বেরিয়ে এসে যুক্ত হয়েছেন বামধারার সাংবাদিকতার সঙ্গে। কারাভোগ করেছেন, নির্বাসিত হয়েছেন। এসব ঘটনা হাসনাত উল্লেখ করেছেন। কবিকে জানার জন্য তাঁর জীবনীও যে জানা চাই, এটা মিথ্যা নয়। হাসনাতের রচনাতে নেরুদা যেমন তেমনি ফয়েজ আহমদ ফয়েজও অত্যন্ত জীবন্ত হয়ে উঠেছেন।
আবুল হাসনাত কবি ও সাংবাদিক। তিনি মাহমুদ আল জামান নামে কবিতা লেখেন। তাঁর জন্ম ১৭ জুলাই ১৯৪৫ সালে পুরনো ঢাকায়। ষাটের দশক থেকে কাব্যচর্চার সূত্রপাত। ঝঞ্ঝাক্ষুব্ধ ষাটের দশকের প্রতিবাদ ও সংগ্রামমুখর জীবনের প্রতিচ্ছবি যেমন তাঁর কাব্যবিশ্বাসে জায়গা নিয়েছে তেমনি স্বাধীনতা-উত্তর বাংলাদেশে প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তিজনিত আনন্দ-বেদনা, অস্থিরতা, নৈরাশ্য ও সংকটময় মুহূর্তগুলিও তাঁর বোধে প্রবলভাবে নাড়া দিয়েছে । সবকিছুর অন্তরালে রোমান্টিক কাব্যধারারও প্রবল স্রোত তাঁর চেতনায় নীরবে বয়ে গেছে।
তাঁর প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থ 'জ্যোৎস্না ও দুর্বিপাক, "কোনো একদিন ভুবনডাঙায়', 'ভুবনডাঙার মেঘ ও নধর কালো বেড়াল' ও 'নির্বাচিত কবিতা'। প্রবন্ধগ্রন্থ : 'সতীনাথ, মানিক, রবিশঙ্কর ও অন্যান্য ও জয়নুল, কামরুল, সফিউদ্দীন ও অন্যান্য'; শিশু ও কিশোরদের নিয়ে রচিত গ্রন্থ : 'ইস্টিমার সিটি দিয়ে যায়', 'টুকু ও সমুদ্রের গল্প', 'যুদ্ধদিনের ধূসর দুপুর', 'রানুর দুঃখ-ভালোবাসা'; কিশোর জীবনী : ‘জসীমউদ্দীন', 'চার্লি চ্যাপলিন' ও 'সূর্যসেন'।
বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী দৈনিক সংবাদের সাহিত্য সাময়িকী দীর্ঘ ২৪ বছর ধরে সুনামের সঙ্গে সম্পাদনা করেছেন। একসময় বাংলাদেশের সাহিত্যের দর্পণ হয়ে উঠেছিল সংবাদ সাময়িকী। বর্তমানে সাহিত্যপত্রিকা কালি ও কলমে'র সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন। একই সঙ্গে চিত্রকলা বিষয়ক ত্রৈমাসিক 'শিল্প ও শিল্পী'র তিনি সম্পাদক।
১৯৮২ সালে টুকু ও সমুদ্রের গল্পের জন্য পেয়েছেন অগ্রণী ব্যাংক শিশু সাহিত্য পুরস্কার। ২০১৪ সালে অর্জন করেছেন বাংলা একাডেমির সম্মানসূচক ফেলো ।
Such an incredibly complex story! I had to buy it because there was a waiting list of 30+ at the local library for this book. Thrilled that I made the purchase
I read this book shortly after I got it and didn't just put it on my TBR shelf mainly because I saw it on Reese Witherspoon's bookclub September read. It was one of the best books I've read this year, and reminded me some of Kristen Hannah's The Great Alone.