১৯২১ সালে ঢাকার রাস্তায় যে অর্ধনগ্ন সন্ন্যাসীকে দেখা গিয়েছিল, বহু মানুষ তাঁকে শনাক্ত করেছিলেন ভাওয়াল এস্টেটের মেজ রাজকুমার রূপে। মেজ রাজকুমার রমেন্দ্রনারায়ণ রায় ছিলেন শিকারপ্রিয়, অসংযত ভোগবিলাসে অভ্যস্ত এবং নারীলোলুপ এক জমিদার। সে-সময়ে বাংলার বহু জমিদারসন্তানের জীবনই ছিল এইরকম। এ কথা প্রচারিত ছিল, রমেন্দ্রনারায়ণ রায়, ১২ বছর আগে দার্জিলিংয়ে প্রয়াত হন। সন্ন্যাসীর আগমনে তাই বিপুল আলোড়ন তৈরি হয়, তৎকালীন ঢাকা, এবং বাংলার সমাজে। সন্ন্যাসীকে তাঁর স্ত্রী 'প্রতারক' বলে চিহ্নিত করেন, আর ভাওয়াল রাজবংশের কন্যারা অর্থাৎ রমেন্দ্রনারায়ণ রায়ের ভগিনীরা সন্ন্যাসীর দেহলক্ষণ দেখে তাঁর মধ্যেই তাঁদের মৃত ভ্রাতাকে খুঁজে পান এবং গ্রহণ করেন তাঁকে। এরপর শুরু হয় সেই বিখ্যাত লড়াই— 'ভাওয়াল সন্ন্যাসী মামলা' নামে যা সর্বজনখ্যাত। কোর্ট অব ওয়ার্ডস-এর হাতে চলে যাওয়া সম্পত্তি ফিরে পেতে সন্ন্যাসী মামলা করেন, আর ব্রিটিশ রাজতন্ত্র তাঁকে 'রাজপ্রতারক' আখ্যা দেয়, যা অবশ্যই ছিল বিচারসাপেক্ষ বিষয়। যে মামলা প্রশ্ন তোলে “ব্যক্তি চিহ্নিতকরণ প্রক্রিয়া'র প্রতি – স্মৃতি, দেহলক্ষণ না পরিচিতজনের স্বীকৃতি, কোন প্রক্রিয়ায় চিহ্নিত হবেন এক ব্যক্তি। দীর্ঘ সময়কাল জুড়ে চলা এই মামলা, লন্ডনে প্রিভি কাউন্সিলেও পৌঁছয়, এবং সেখানেও সন্ন্যাসী বিজয়ী হন, যদিও ততদিনে তিনি গৃহী পুরুষ, দ্বিতীয়বার দারপরিগ্রহ করেছেন। এই গ্রন্থ নতুন আঙ্গিকে এবং তথ্যসমৃদ্ধ উপায়ে বর্ণিত করে বহুশ্রুত 'ভাওয়াল সন্ন্যাসী মামলা'কে, যা ছিল তৎকালীন ভারতের সবচেয়ে আলোড়নকারী এবং ইতিহাস সৃষ্টিকারী এক মামলা।
Specification
Titel: | রাজপ্রতারক? |
---|---|
Author | পার্থ চট্টোপাধ্যায় |
Translator: | গৌরব চট্টোপাধ্যায় |
Publication: | আনন্দ পাবলিশার্স |
ISBN: | 978-93-5425-191-7 |
Edition: | 2022 |
Number of Pages: | 606 |
Country: | India |
Language: | Bangla - বাংলা |