সুলতান মুহাম্মদ দারা শুকো (১৬১৫-১৬৫৯ খ্রি.) মুঘল সম্রাট শাহজাহানের জ্যেষ্ঠ পুত্র। ইতিহাসে শাহজাদা দারা শুকোর মতো চরিত্র বিরল। তিনি বিদগ্ধ, ধ্যানী, শিল্পী, কবি, দার্শনিক। মুঘল বংশের শ্রেষ্ঠ বুদ্ধিবৃত্তিক রত্ন। সমরবিদ্যা, রাজনীতির চেয়ে তিনি আগ্রহী ছিলেন অধ্যয়নে, দার্শনিক আলাপে। রচনা করেছেন বেশ কয়েকটি গ্রন্থ এবং উপনিষদ অনুবাদ করেছেন ফারসি ভাষায়। তাঁর এই অনুবাদের সূত্রেই উপনিষদ পশ্চিমা পণ্ডিতদের নজরে আসে এবং তাঁদের চিন্তায় আলোড়ন তোলে। এদের মধ্যে ছিলেন জার্মান দার্শনিক শোপেনহাওয়ার। তুলনামূলক ধর্ম অধ্যয়নে দারার কীর্তি ঈর্ষণীয়। হিন্দু ও ইসলামী দর্শনের তুলনামূলক আলোচনায় তাঁর রচিত মজমা-উল-বাহরায়েন গ্রন্থটি মৌলিকতার বিচারে দুনিয়ায় অনন্য।শাহজাদা দারা শুকো বিভিন্ন দেশ থেকে গ্রন্থ সংগ্রহ করেছিলেন নিজের গ্রন্থাগারের জন্য। ক্যালিগ্রাফি করেছেন, রচনা করেছেন কাব্য। চিত্রকর এবং কবিদের পৃষ্ঠপোষকতা করেছেন, সংগ্রহ করেছেন চিত্রকর্ম। স্ত্রী নাদিরা বেগমকে নিজের সংগ্রহে থাকা বিশিষ্ট শিল্পীদের আঁকা চিত্রকর্মের একটি অ্যালবাম উপহার দিয়েছিলেন, যেটিকে বিশেষজ্ঞরা কোহিনূর হীরার সঙ্গে তুলনা করেন। সম্রাট শাহজাহানের প্রিয় পুত্র এবং মনোনীত উত্তরাধিকারী হওয়া সত্ত্বেও মুঘল সিংহাসনে আরোহণ করতে পারেননি, বরং ছোট ভাইয়ের হাতে পরাজিত হয়ে দারাকে জীবন দিতে হয়েছে। ভিন্ন ধর্মের প্রতি তাঁর উদার দৃষ্টিভঙ্গি এবং তুলনামূলক ধর্ম অধ্যয়নকে ধর্মদ্রোহিতা আখ্যা দিয়ে তাঁকে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়েছিল। অনেক ইতিহাতবিদ দারার পরাজিত হওয়াকে দক্ষিণ এশিয়ার ইতিহাসের একটি সন্ধিক্ষণ বলে বিবেচনা করেন। বিভিন্ন ধর্মের মধ্যে পারস্পরিক শান্তিপূর্ণ ও ভ্রাতৃত্বসুলভ সহাবস্থানের পরিবেশ সৃষ্টির যে প্রচেষ্টা সম্রাট আকবর শুরু করেছিলেন, তা শাহজাদা দারা শুকোর মৃত্যুর মধ্য দিয়ে বিলুপ্ত হয়।শাহজাদা দারা শুকো গ্রন্থটি তিন ভাগে বিভক্ত। প্রথম ভাগে আলোচিত হয়েছে দারা শুকোর জীবন, কর্ম ও দর্শন। দ্বিতীয় ভাগে রয়েছে শাহজাদার কিছু রচনার বঙ্গানুবাদ। এবং তৃতীয় ভাগে সংযোজিত হয়েছে দারা শুকোকে নিয়ে কয়েকজন বিদেশী ইতিহাসবিদ ও লেখকের রচনা।
Specification
Titel: | শাহজাদা দারা শুকো |
---|---|
Author | শানজিদ অর্ণব |
Publication: | দিব্যপ্রকাশ |
ISBN: | 9789849263141 |
Edition: | 2021 |
Number of Pages: | 216 |
Country: | Bangladesh |
Language: | Bangla - বাংলা |