"অলাতচক্র" উপন্যাসটি মুক্তিযুদ্ধকালে কলকাতায় আশ্রয়রত প্রায় এক কোটি শরণার্থী। যাদের মধ্যে ৮০ লক্ষ হিন্দু এবং বিশ লক্ষ মুসলমান ছিল-সে শরণার্থীদের মানবেতর জীবন সম্পর্কে ক্ষীণ ছায়াপাতের সাথে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান থেকে কলকাতায় ট্রেনিং নিতে যাওয়া ট্রেনিং ক্যাম্পের যুবক ও অন্যান্য মানুষদের সংগ্রাম এবং তাদের উচ্চকিত হয়ে ওঠা অসহায়ত্ব বর্ণনার সাথে সাথে তায়েবা নাম্নী এক প্রগতিশীল দেশপ্রেমিক যুবতীর অসুস্থতায় নিঃশেষ হয়ে মৃত্যুবরণের উপন্যাসোচিতভাবে উপস্থাপিত হয়েছে। কথা উত্তমপুরুষে বর্ণিত 'আমি' চরিত্রটি লেখক নিজে এবং তিনিই এ উপন্যাসের নায়ক। মুক্তিযুদ্ধের কারণে পাকিস্তানি সৈন্যদের দ্বারা নিগৃহীতা যুবতী কলকাতার পি.জি. হাসপাতালে চিকিৎসারতা তায়েবা এ উপন্যাসের নায়িকা। লেখকের সাথে তায়েবার চার বছরের একটি মানসিক সম্পর্ক ছিল; লেখক কলকাতায় তাকে হাসপাতাল থেকে খুঁজে বের করেছেন। তায়েবা, যার ব্যক্তিত্ব প্রবল এবং প্রখর; কারো কাছে সে কোনো অধিকার খাটায় না-লেখকের কাছে সে ভাত ও মাছ রান্না করে নেওয়ার অধিকার খাটিয়েছে। তায়েবা মনে-প্রাণে। লেখককে ভালোবাসত। লিউক্যামিয়া রোগে তায়েবা নিঃশেষিত হয়ে যাচ্ছিল; অৰ্চনা নাম্নী এক অধ্যাপিকা এবং পত্রিকা সম্পাদকের সাথে লেখকের যোগাযোগ ও অন্তরঙ্গতার সূত্র যখন তায়েবাকে ঈর্ষান্বিত করে তুলছিল তখনই শুধু এতদিন ঈর্ষাহীন এবং পার্টিগত প্রাণ বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত যুবতী তায়েবা লেখকের প্রতি নির্ভরশীল এবং সমর্পণপ্রবণ হয়ে উঠেছিল। তায়েবার বোন ডোরা, তার ভাই হেনা, ডোরার স্বামী জাহিদুল, ডা. মাইতি, তায়েবার মা, মাসুদ, খোরশেদ, সুনীল, শেখ মুজিব, অধ্যাপক নরেশ, ইয়াহইয়া, শরণার্থীবৃন্দ, ট্রেনিংপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধবৃন্দ, আপামর স্বদেশপ্রেমী বাঙালি-তাঁর উপন্যাসের মধ্যে প্রত্যক্ষ-পরোক্ষ ভূমিকা রেখেছে। প্রগতিশীল মুক্তমনা ও ব্যক্তিত্বশালী তায়েবার প্রতি লেখক-চরিত্রটির অর্থাৎ দানিয়েলের গভীর প্রেমপ্রবণতামূলক মূলকাহিনীর সাথে সম্পর্কিত করে অন্যান্য চরিত্রের সংযোগের মাধ্যমে উপন্যাসটির আঙ্গিক-কাঠামো গড়ে উঠেছে।
Specification
Titel: | অলাতচক্র |
---|---|
Author | আহমদ ছফা |
Publication: | হাওলাদার প্রকাশনী |
ISBN: | 978-984-8966-37-2 |
Edition: | 2017 |
Number of Pages: | 160 |
Country: | Bangladesh |
Language: | Bangla - বাংলা |