মারিয়ো বার্গাস ইয়োসা
মারিও বার্গাস ইয়োসা (স্পেনীয় ভাষায়: Mario Vargas Llosa) পেরুর শীর্ষস্থানীয় কথাসাহিত্যিক ও গদ্যকার যিনি ২০১০ খ্রিষ্টাব্দে সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন। তার রাজনীতিস্নাত রচনাবলীতে ল্যাটিন আমেরিকায় ক্ষমতা ও দুর্নীতির অমানিশা তীব্র ও নিবিড়ভাবে চিত্রিত। বিংশ শতকের হিস্পানী লেখকদের মধ্যে তিনি অন্যতম প্রধান। তার রচিত উপন্যাস, নাটক এবং গদ্যগ্রন্থের সংখ্যা ৩০-এর অধিক। স্পেনীয় ভাষার সাহিত্যে বার্গাস ইয়োসার নাম কালোর্স ফুয়েন্তেস এবং গার্সিয়া মার্কেসের সঙ্গে সমমর্যাদায় উচ্চারিত হয়ে থাকে। অনেক পর্যবেক্ষকের মতে আন্তর্জাতিক সাহিত্য পরিমণ্ডলে তার প্রভাব গভীরতর। ১৯৬০-এর দশকে নায়কের কাল, দ্য গ্রীন হাউস এবং গীর্জ্জায় কথোপকথন উপন্যাসত্রয় কেন্দ্র করে তার খ্যাতি ছড়িয়ে পড়তে থাকে। উপন্যাস, প্রবন্ধ-নিবন্ধ এবং সংবাদপত্রীয় রচনাবলীতে অবধৃত তার অকপট রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গী শাসক মহলে বিশেষ তোলপাড় সৃষ্টি করে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে পেরুর জাতীয় ও সামাজিক প্রেক্ষাপটে রচিত হলেও কেবল পেরু নয় বরং ক্রমশ বিংশ শতকের বিশ্বব্যাপী সাধারণ মানুষের রাজনীতিসঞ্জাত অসহায়ত্ব ও বিপন্নতা তার লেখনীতে প্রতিফলিত হয়েছে। তার রচনায় দ্রোহের গভীর অনুপ্রাণনার সঙ্গে-সঙ্গে রয়েছে ব্যাপ্ত কৌতুকাবহ, কখনো যৌনতা। যেখানেই মানুষের স্বাধীনতা বিপন্ন কিংবা মানবাধিকার লাঞ্চিত সেখানেই বার্গাস ইয়োসার প্রতিবাদী কণ্ঠস্বর শোনা যায়। তাই তাকে ল্যাটিন আমেরিকার "রাজনৈতিক বিবেক" বিবেচনা হয়। সমাজ বদলের অনপনেয় তাড়না তাকে প্রত্যক্ষ রাজনীতিতে সম্পৃক্ত করেছিল ; তিনি ১৯৯০ খ্রিষ্টাব্দে পেরুর রাষ্ট্রপতি পদের জন্য সাধারণ নিবার্চনে অংশগ্রহণ করেছিলেন। যদিও তিনি জয় লাভ করেন নি, তবু চেকোস্লাভাকিয়ার ভাস্লাভ হাভেলের পর পৃথিবীতে তিনিই দ্বিতীয় সাহিত্যিক যিনি ভোটাভুটির প্রথম পর্বে বিজয়ী হয়ে রাষ্ট্রক্ষমতার শীর্ষ পদ গ্রহণের কাছাকাছি পৌঁছে গিয়েছিলেন।