মণিপুরীরা বাংলাদেশের অভিবাসিত জনজাতির একটি। বাংলাদেশে জনসংখ্যায় তারা ক্ষুদ্র হলেও তাদের সাংস্কৃতিক ঐলো সারা বিশ্বব্যাপী তাদের পরিচিতি রয়েছে। বিশেষত মণিপুরী লোকনৃত্য ও ধ্রুপদী শাস্ত্রীর নৃতার জন্য। আর তা অনেকটাই সম্ভব হয়েছে কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের [১৮৬১-১৯৪১] কল্যাণে।মণিপুরীদের মূল আবাসস্থল ভারতের পূর্বাংশে যা মণিপুর রাজা নামে খ্যাত। ভারতের সাত বোন আদিবাসী রাজ্যর [Seven Sisters State] একটি মণিপুর। অন্যগুলো হলো : আসাম, ত্রিপুরা, মিজোরাম, নাগাল্যান্ড, অরুণাচল প্রদেশ ও সিকিম। এ সকল রাজ্যর প্রতিটির ভাষা-সংস্কৃতি আলাদা বৈশিষ্ট্যের অধিকারী। বাংলাদেশে মণিপুরীদের অভিবাসন মূলত মণিপুরী-বর্মী যুদ্ধের পর [১৮১৯-১৮২৫]। পরজিত মণিপুরীরা পার্শ্ববর্তী কাছাড়, আসাম, ত্রিপুরা ও বাংলাদেশে আশ্রয় গ্রহণ করে ও অভিবাসিত হয়। তৎসত্ত্বেও নানা কারণে বাংলাদেশের সিলেটের সাথে মণিপুরীদের যোগাযোগটা অনেক অনেক আগে থেকেই ছিল।মণিপুর প্রাচীন কাল থেকেই একটি সভ্য ও উন্নত সাংস্কৃতিক বৈশিষ্ট্য ও ঐতিহ্যিক রাষ্ট্র হিসেবে পরিগণিত। অপার সৌন্দর্য্যের লীলাভূমি বিপুল শস্য-শ্যামলা ও শিল্পকর্মে সুনিপুণা এই দেশটি বারে বারে পরাশক্তির দ্বারা আক্রান্ত হয়েছে। নানা যুদ্ধ-বিগ্রহ তাদের শান্ত মন অশান্ত ও বিদ্রোহী করে তুলেছে। সর্বশেষ ১৯৪৯ খ্রি: মণিপুরের শতভাগ লোকের অনিচ্ছা সত্ত্বেও তাদের অন্যায়ভাবে ভারত প্রজাতন্ত্রের অন্তর্ভুক্ত করা হয়। বলা যায়- সেই থেকে মণিপুর গণতন্ত্রের নামে ভারতের সেনা-শাসিত রাজ্য। বিগত সত্তর বছর। ধরে এর বিরুদ্ধে মণিপুরে রক্তক্ষরণ চলছে।মণিপুরীরা ভাষা, নৃগোষ্ঠী পরিচয় ও ধর্মীয়ভাবে তিন ভাগে বিভক্ত। যথা : মৈতৈ মণিপুরী- যারা মণিপুরে সংখ্যাগরিষ্ট তাদের ভাষা ভোট-ব্রহ্ম শাখা মৈতৈ-ময়েক এবং মঙ্গোলীয় রক্তধারার কিরাত জাতিভুক্ত, ধর্মে বৈষ্ণববাদী হিন্দু, পাস্তান যারা মণিপুরে দ্বিতীয় সংখ্যাগরিষ্ট জনগোষ্ঠী- তারাও মঙ্গোলীয় নৃগোষ্ঠীর মুসলিম ধর্মী এবং তাদের ভাষা মৈতৈ-ময়েক, তৃতীয় মণিপুরী জনগোষ্ঠী বিষ্ণুপ্রিয়া যারা ইন্দো-ইরানীয় মিশ্র-মানব ও ইন্দো-আর্য শাখার মিশ্রভাষা সৌরসেনী ভাষায় কথা বলে, ধর্মে বৈষ্ণবহিন্দু- বাংলাদেশে মণিপুরীদের মধ্যে সংখ্যাগরিষ্ট।এই গ্রন্থে স্বভাবে নম্র-ভদ্র-বিনয়ী ও সহজ-সরল ন্যায়নিষ্ঠ মণিপুরীদের প্রাগেতিহাসিক কাল, নৃতাত্ত্বিক পরিচয় ও সৃষ্টিতত্ত্ব, ভাষা-সংস্কৃতি-শিক্ষা-সাহিত্য, গোত্র-সমাজ, পরিবার ও বিবাহ, নৃত্যগীত, অনক্ষর সমাজের বৈশিষ্ট্য ও অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া ইত্যাদি আলোচিত হয়েছে।
কবি ও গবেষক মুস্তাফা মজিদ এর রয়েছে ১০টি কাব্যগ্রন্থ। যথাক্রমে- ‘মেঘবতী সুবর্ণভূমি, “তােকে নিয়ে প্রেম প্রেম খেলা, কুসুমিত পঞ্চদশী’, ‘পুষ্পপত্রে নীলকণ্ঠ’, ‘জনযুদ্ধের কনভয়, ‘সাকিন সুবিদখালী’, ‘স্বাতীর কাছে চিঠি’, Diary of a Nepalese Guerrillas সম্পাদিত কবিতাসমগ্র ঃ মাও সেতুঙ এবং নিবেদিত কবিতা সংকলন ‘প্রাণিত রবীন্দ্রনাথ’ । এই কবি কবিতা লেখার পাশাপাশি বাংলাদেশে বসবাসরত। মঙ্গোলীয় ক্ষুদ্র নৃগােষ্ঠীর মানুষদের নিয়ে গবেষণার সঙ্গে সঙ্গে লােক প্রশাসন ও আমলাতন্ত্র নিয়েও গবেষণা করে আসছেন। বাংলাদেশের রাখাইন জাতিসত্তার আর্থ-সামাজিক ও প্রশাসনিক সমীক্ষা নিয়ে অভিসন্দর্ভ রচনার জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচ ডি ডিগ্রী অর্জন করেন। যা বাংলাদেশের রাখাইন’ শিরােনামে বাংলা ভাষায় বাংলা। একাডেমী এবং The Rakhaines শিরােনামে ইংরেজি ভাষায়। ঢাকার মাওলা ব্রাদার্স থেকে গ্রন্থাকারে প্রকাশিত হয় । ড. মুস্তাফা মজিদের এ পর্যন্ত রচিত ও সম্পাদিত গ্রন্থ সংখ্যা। ৪০ উর্ধ্ব। তার উল্লেখযােগ্য গ্রন্থের মধ্যে ত্রিপুরা জাতি। পরিচয়’, ‘পটুয়াখালীর রাখাইন উপজাতি', আদিবাসী রাখাইন’, ‘মারমা জাতিসত্তা' বাংলাদেশে মঙ্গোলীয়। আদিবাসী’, ‘গারাে জাতিসত্তহজং জাতিসত্তা’, আদিবাসী সংস্কৃতি (১ম ও ২য় খণ্ড), রূপান্তরের দেশকাল’, ‘সমকালের আত্মকথন’, ‘লােক প্রশাসনের তাত্ত্বিক প্রসঙ্গ’, ‘বাংলাদেশের আমলাতন্ত্র', 'রাজনীতিতে সামরিক আমলাতন্ত্র’, ‘নেতৃত্বের স্বরূপ’, বাংলাদেশে বঙ্কিমচন্দ্র’, ‘মুক্ত ও মুগ্ধদৃষ্টির রবীন্দ্র বিতর্ক’ । আর ছােটদের জন্য রচিত ও সম্পাদিত গল্প গ্রন্থ। ‘দীপুর স্বপ্নের অরণি’, ‘জীবন থেকে’ ও ‘ছােটদের ৭টি মঞ্চ নাটক’ এবং জীবনী গ্রন্থ ‘রূপকথার নায়ক হ্যান্স ক্রিশ্চিয়ান অ্যান্ডারসন’ ও ‘বঙ্গবীর ওসমানী। মার্কসীয় মুক্ত চিন্তার যৌক্তিক দৃষ্টবাদে অবিচল মুস্তাফা মজিদ কৈশােরে উনসত্তরের গণ অভ্যুত্থান এবং একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধে। অংশগ্রহণসহ কৈশাের থেকেই নানা সাংস্কৃতিক আন্দোলনে। জড়িত । বাংলা একাডেমীর জীবন সদস্য, জাতীয় কবিতা পরিষদ, ছায়ানট, ঢাকা থিয়েটার ও জাতীয় প্রেসক্লাবের সদস্য। এছাড়াও তিনি সত্তর ও আশির দশকে শিশু-কিশাের। সংগঠন গড়া ও নাট্য আন্দোলনে সম্পৃক্ত ছিলেন । পেশায় প্রথমে সাংবাদিকতা এবং পরে ১৯৮৪ থেকে কেন্দ্রীয় ব্যাংক তথা বাংলাদেশ ব্যাংকে কর্মরত আছেন। বর্তমানে মহাব্যবস্থাপক ড. মুস্তাফা মজিদ ১৯৫৫ সালের ১৪ই এপ্রিল পটুয়াখালী জেলার সুবিদখালীতে জন্মগ্রহণ করেন । ভ্রমণ করেছেন ইংল্যান্ড, ফ্রান্স, সুইডেন, জার্মানী, বেলজিয়াম ও নেদারল্যান্ড।
Such an incredibly complex story! I had to buy it because there was a waiting list of 30+ at the local library for this book. Thrilled that I made the purchase
I read this book shortly after I got it and didn't just put it on my TBR shelf mainly because I saw it on Reese Witherspoon's bookclub September read. It was one of the best books I've read this year, and reminded me some of Kristen Hannah's The Great Alone.