কথাসাহিত্যিক, সাংবাদিক, সমাজবিশ্লেষক এবং কল্যাণব্রতী জীবনাদর্শের বাহক চিরসংগ্রামী আবু জাফর শামসুদ্দীন বাংলাদেশের বুদ্ধিবৃত্তিক জগতের এক জ্যোতির্ময় ব্যক্তিত্ব। স্বদেশের মাটির ওপর দৃঢ় পায়ে দাঁড়িয়ে বিশ্ববীক্ষণ মননে ধারণ করে তিনি সমকালীন জগৎ ও জীবনকে বুঝতে যেমন সচেষ্ট হয়েছেন, তেমনি বাস্তবতার বিবিধ বঞ্চনা ও পীড়নের বিরুদ্ধে সর্বজনের মুক্তিপথ রচনার সাধনায় নিরলসভাবে ব্রতী ছিলেন। গ্রামীণ পটভূমিকা থেকে তাঁর এক আশ্চর্য উত্থান, চল্লিশের দশকের কলকাতায় উদারবাদী মুসলিম সমাজের সারস্বত বৃত্তে তাঁর অধিষ্ঠান এবং সাতচল্লিশ পরবর্তীকালে ঢাকায় স্থিত হয়ে পূর্ববাংলার সাহিত্যিক-সাংস্কৃতিক-রাজনৈতিক জীবনের সঙ্গে সম্পৃক্ততার মধ্য দিয়ে তাঁর অব্যাহত মননচর্চা ও কর্মসাধনা তাঁকে যুগিয়েছে উত্তাল ও পরিবর্তনময় সময়ের লিপিকার হওয়ার বিরল দক্ষতা। পদ্মা মেঘনা যমুনা, ভাওয়ালগড়ের উপাখ্যান কিংবা দেয়াল-এর... মতো ঐতিহাসিক উপন্যাস রচনার মাধ্যমে তিনি সময়ের শিল্পিত ভাষ্য রেখে গেছেন। তুলনীয় আরেক মহাকাব্যিক রচনা ইতিপূর্বে দুই খণ্ডে প্রকাশিত তাঁর আত্মস্মৃতি, নতুন মুদ্রণে যা পুনঃপ্রকাশিত হলো একত্রে বর্ধিত ও অখণ্ড সংস্করণরূপে। বহুমাত্রিক এই গ্রন্থের তাৎপর্য ও বৈশিষ্ট্য স্বল্পপরিসরে তুলে ধরা দুরূহ, তবে এটুকু নির্দ্বিধায় বলা যায় বর্তমান গ্রন্থ সকল শ্রেণীর পাঠকের আত্মোপলব্ধি বিপুলভাবে প্রসারিত করবে, জীবন ও সময়ের চলমান ছবি উন্মোচিত হবে উপন্যাসের সজীবতা ও সমাজতাত্ত্বিকের উপলব্ধি নিয়ে। এমন গ্রন্থপাঠ সব পাঠকের জন্য এক অবিস্মরণীয় অভিজ্ঞতা।
আবু জাফর শামসুদ্দীন (১২ মার্চ, ১৯১১ - ২৪ আগস্ট, ১৯৮৮) ছিলেন ধর্মনিরপেক্ষ ও প্রগতিশীল লেখক। তিনি ছিলেন একজন বিশিষ্ট সাংবাদিক ও সাহিত্যিক। উপন্যাস, ছোট গল্প ও মননশীল প্রবন্ধ লিখে তিনি খ্যাতি অর্জন করেন। তিনি একুশে পদক লাভ করেছেন। তার রচিত পদ্মা মেঘনা যমুনা বাংলার সাহিত্যের একটি অনন্য গ্রন্থ। এছাড়াও তার রচিত বেশ কিছু গ্রন্থ ইংরেজি, হিন্দি, উর্দু, মারাঠি, জাপানি ভাষায় অনুবাদ ও প্রকাশ করা হয়েছে। কর্মজীবনের শুরুতে তিনি দৈনিক সুলতানের সহ-সম্পাদক হিসেবে কাজ করেন। ১৯৩১ সালে তিনি সরকারের সেচ বিভাগে যোগ দেন। ১৯৪২ সালে সেচ বিভাগের কাজ পরিত্যাগ করে কটকে নির্মাণাধীন বিমানঘাটি তদারকি অফিসের হেড ক্লার্ক পদে যোগ দেন। কয়েক মাস পর তিনি এ চাকরি ছেড়ে আবার সাংবাদিকতা শুরু করেন। এ সময় তিনি দৈনিক আজাদে যোগ দেন। ১৯৪৮ সালের অক্টোবরে পত্রিকাটি কলকাতা থেকে ঢাকায় চলে আসার পর তিনি সহকারী সম্পাদক হিসেবে নিযুক্ত হন। ১৯৫০ সালে আজাদ থেকে তাকে অব্যাহতি দেওয়া হলে তিনি প্রকাশনা ব্যবসা সংস্থা কিতাবিস্তান প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯৫০-৫১ সালে তিনি সাপ্তাহিক ইত্তেফাকের সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৫২ সালে ভাষা আন্দোলনে তিনি সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন। ১৯৫৭ সালের ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিত কাগমারীর সাংস্কৃতিক সম্মেলনের সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টির জন্মলগ্ন থেকেই তিনি এ দলের সঙ্গে জড়িত হন এবং কিছুদিন ঢাকা জেলা কমিটির সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৬১ সালে বাংলা একাডেমির অনুবাদ বিভাগের অধ্যক্ষ নিযুক্ত হন। ১৯৭২ সালে তিনি এ চাকরি থেকে অবসর নেন। এরপর তিনি দৈনিক পূর্বদেশের সম্পাদকীয় বিভাগে যোগ দেন। ১৯৭৫ সালে পূর্বদেশ বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর তিনি দৈনিক সংবাদে যোগ দেন। সংবাদে তিনি অল্পদর্শী ছদ্মনামে বৈহাসিকের পার্শ্বচিন্তা নামে কলাম লেখেন। এ সময় তিনি বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের উচ্চপদে দায়িত্ব পালন করেন।
Such an incredibly complex story! I had to buy it because there was a waiting list of 30+ at the local library for this book. Thrilled that I made the purchase
I read this book shortly after I got it and didn't just put it on my TBR shelf mainly because I saw it on Reese Witherspoon's bookclub September read. It was one of the best books I've read this year, and reminded me some of Kristen Hannah's The Great Alone.